ফিকশন
বাঙালি আলস্যকে কেন পাপ বলে মনে করে না।। সিরাজের দরবার।।
অতঃপর শব্দায়ন
পশ্চিমে সাতটি বিষয়কে ডেডলি সিন বা মহাপাপ বলা হলেও বাঙালী চালাকি করে ষড়ঋপু বলে ছয়টি মহাপাপকে স্বীকৃতি দিয়েছে। একটাকে বাদ দিয়ে। যে একটাকে বাঙালী পাপ বলে মনে করে না সেটা হলো আলস্য! তো বাঙালী আলস্যকে কেন পাপ বলে মনে করে না, তা নিয়ে কথা বলতেই হুজুর হাজির হয়েছেন!
বাঙালি আলস্যকে কেন পাপ বলে মনে করে না।। সিরাজের দরবার।।
হ্যালো বন্ধুরা, সবাইকে সিরাজের দরবারে স্বাগতম! খোশামদেদ। আমি সিরাজ। হাজার বছর ধরে বাঙালি জাতি নিজের সাথেই চালাকি করে আসছে। এই চালাকির ফলে নিজেই নিজেকে ধোকা দেয়। পশ্চিমে মানে ইউরোপে এই সাতটি বিষয়কে মহাপাপ বা ডেডলি সিন বলা হলেও বাঙালি জাতি চালাকি করে ষড়রিপু বলে এই ছয়টিকে মহাপাপ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। একটিকে বাদ দিয়ে। এই একটি হল: আলস্য বা অলসতা। এই আলস্য বা অলসতাকে বাঙালি পাপ বলেই মনে করে না। কেন বাঙালি আলস্য বা অলসতাকে পাপ বলে মনে করে না? কারণ বাঙালি হল আরাম প্রিয় জাতি। এই আরাম প্রিয় তাই তাকে কুম্ভকর্ণের মত ঘুম পাড়িয়ে রাখে। অনেকটা ঘরবাড়ি পুড়ে গেলেও বিছানা থেকে উঠতে হবে বলে বাঙালি শুয়েই থাকে।
ইতিহাসের দিকে তাকালে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে ভুরি ভুরি। আর এখন তো এটা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর কারণ হলো সোশ্যাল মিডিয়া। আগে পূজা-পার্বণ উৎসব আনন্দে বাঙালি সবার সাথে একাত্ম হত। অন্যের ভালো-মন্দে কষ্ট হলেও গিয়ে দাঁড়াতো। কিন্তু এখনই সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে বাঙালি কারো আগে পিছে নাই। সোশ্যাল মিডিয়া বা ফেসবুক খুলে একটা সহমত লিখে পোস্ট করেই খুন। আর যারা সহমত লিখবে না তারা ভিডিও কল করে করে টাইমলাইন শেষ করবে।
আপনাদের একটা গল্প বলি- দুই বন্ধুর গল্প। দুই বন্ধু আম গাছের নিচে শুয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। হঠাৎ করে একটি আম টুকুস করে মাটিতে পড়ল। প্রথম বন্ধুটি একটি দেখে তার লোভ হল। সে আম খাবে কিন্তু অলসতার কারণে সে উঠে গিয়ে আমটি আনবে না। তাই সে তার বন্ধুটিকে বলে ওই দেখ বন্ধু, ওই দেখ আম পড়ছে। গিয়ে নিয়ে আয় আমরা দুজন ভাগাভাগি করে খাই। কিন্তু দ্বিতীয় বন্ধুটি কোন জবাব দেয় না। তাই সে আবার বলে, বন্ধু ওই আম পড়ছে গিয়ে নিয়ে আয় দুজন মিলে খাই। তাও বন্ধুটি কোন জবাব দেয় না। এভাবে বেশ কয়েকবার বলার পর দ্বিতীয় বন্ধুটি হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে বলে, এই যে একটু আগে একটা কুত্তাকে এসে আমার মুখে ঐ ঠ্যাং তুলে দিল। তোরে বারবার বললাম কুত্তাটি আমার মুখে হিসু করে দিবে, উঠে গিয়ে তাড়িয়ে দে। তুই সেটা করলি না। কুকুরটি আমার মুখে মানে কুত্তাটি আমার মুখে হিসু করে দিয়ে চলে গেল। কুত্তাটি আমার মুখে হিসু করে দিয়ে চলে গেল তাও আমি এখান থেকে উঠলাম না। আর তুই কিভাবে ভাবলি তোর জন্য উঠে গিয়ে আম নিয়ে আসব।
এই হল বাঙালি! কুকুর মুখে হিসু করে দিয়ে যাবে তাও এই বাঙালি অলসতার কারণে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দিতে পারবে পুরো একটি জীবন। ঠিক এই কারণেই এই বাঙালি আলস্য বা অলসতাকে মহাপাপ বলে স্বীকৃতি দেয়নি। তো নদীর পানি যেদিকে যায় যাক। বাঙালি শুয়ে থাকবে বসে থাকবে মাঝে মাঝে আড়মোড়া ভাঙবে ঠিকই কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যাবে।