ডকুমেন্টরি

কোতোয়াল ।। ভাস্কর্যের শব্দায়ন ১০ ।।

অতঃপর শব্দায়ন

ঢাকার বেইলি রোড ও ঢাকার মিন্টো রোডের সংযোগস্থলে অবস্থিত ‘কোতোয়াল’ ভাস্কর্যটি। এর নির্মাতা ভাস্কর মৃণাল হক।

ঢাকার মিন্টো রোডের পূর্ব পাশের শেষ মাথায় অবস্থিত কোতোয়ালের ভাস্কর্যটি। যেটা ঢাকার অতীতকালের শাসনব্যবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
‘কোতোয়াল’ ভাস্কর্যটির নির্মাতা ভাস্কর মৃণাল হক। মূল ভাস্কর্যে কাল রঙের বেদীর ওপর সোনালী রঙের দুইজন কোতোয়াল অগ্রগামী ঘোড়ায় শক্ত চাবুক হাতে বসে রয়েছে। যা একই সাথে আভিজাত্য ও সমাজের উচ্চশ্রেণির শক্তি প্রয়োগের প্রতীক হিসাবে প্রতীয়মান হয়।

‘কোতোয়াল’ শব্দের অভিধানিক অর্থ- নগর রক্ষক, থানাদার, কেটাল বা কমিশনার। কোতোয়াল মূলত তুর্ক-আফগান ও মোঘল আমলে নগরের পুলিশব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পদবি। অনেকটা বর্তমান সময়ের থানার ওসি পদমর্যদা কর্মকর্তা হলেন কোতোয়াল।
শাহী সনদের মাধ্যমে নিযুক্ত হওয়ায় একজন কোতোয়াল দায়িত্ব পালনে স্বাধীনতা ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। সম্রাট আকবরের প্রধানমন্ত্রী আবুল ফজল তাঁর ‘আইন-ই-আকবরী’ গ্রন্থে নগর কোতোয়ালের ক্ষমতা ও দায়িত্বের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

হাট-বাজারের ইজারা, কৃষি, বন্দর বা ঘাট ইজারা থেকে খাজনা, রাজস্ব কিংবা ট্যাক্স উত্তোলন করাই ছিলো তাদের মূল দায়িত্ব। রাজস্ব বা খাজনা দেয়া ব্যর্থ ব্যক্তিদের ধরে এনে নিজেদের জিম্মায় রাখতো কোতোয়াল বাহিনী। পরবর্তীতে সেইসব সেই স্থানগুলোই ‘কোতোয়ালি থানা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এখনো পুরানো শহরে কোতোয়ালী থানা নামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা নগরীর কোতোয়াল সগৌরবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৭৯৩ সালে নায়েব নাজিমের নিজামত সংক্রান্ত দায়িত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটলে তার সাথেসাথে কোতোয়াল পদটিরও বিলুপ্তি ঘটে। ১৮৪৩ সাল পর্যন্ত নামমাত্র প্রতীকস্বরূপ কোতোয়াল পদটি টিকে ছিল। নাম বা সেই পদবী বিলুপ্ত হলেও এখনও সেই সময়ের কোতোয়াল টিকে আছে কোতোয়ালি থানার মাধ্যমে।

অপরাজেয় বাংলা ।। ভাস্কর্যের শব্দায়ন ০১ ।।
ডকুমেন্টরি
স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ।। ভাস্কর্যের শব্দায়ন ০২ ।।
ডকুমেন্টরি
স্বাধীনতা সংগ্রাম ।। ভাস্কর্যের শব্দায়ন ০৩ ।।
ডকুমেন্টরি
স্মৃতি চিরন্তন ।। ভাস্কর্যের শব্দায়ন ০৪ ।।
ডকুমেন্টরি